২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে এক লাখ ১৫ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় স্বাস্থ্য খাতে চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে যার আওতায় মোট ২৯টি অপারেশনাল প্লানের মাধ্যমে সারাদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদান ও চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচি সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ : স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে সরকার যে সকল উল্লেখযোগ্য প্রকল্প গ্রহণ করেছে তার মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ, সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সকল জেলা সদর হাসপাতালে নেফ্রলজি ইউনিট ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন এবং বিভাগীয় শহরে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসায় ইউনিট স্থাপনের জন্য গৃহীত প্রকল্প।
এছাড়া হবিগঞ্জ, নীলফামারী, নেত্রকোনা, মাগুরা ও নওগাঁ জেলায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত হোস্টেল নির্মাণ, মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপন এবং প্রতিটি বিভাগীয় হাসপাতালে শিশু কার্ডিয়াক ইউনিট স্থাপনের জন্য প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়ন : মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মাতৃ স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য গৃহীত কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হলো- চিকিৎসকদের জরুরি প্রসূতি সেবার ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান মাঠপর্যায়ের কর্মীদের কমিউনিটি বেজড অ্যাটেনডেন্ট প্রশিক্ষণ প্রদান, নিরাপদ সেবা প্রদান, গর্ভবতী মায়েদের সমন্বিত চিকিৎসা সেবা প্রদান, প্রাতিষ্ঠানিক সেবা গ্রহণ ও উৎসাহ প্রদান, মাতৃ স্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম সম্প্রসারণ এবং সার্বিক ব্রেস্ট ক্যান্সার শনাক্তকরণ। অন্যদিকে নবজাতকের চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারণের জন্য ১০টি জেলা হাসপাতাল ও ১০০টি উপজেলা হাসপাতালে স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ন ইউনিট চালু করা হয়েছে। জনগণের ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সরকার নয় হাজার ৭৯২ জন মেডিকেল অফিসার নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা বিস্তৃতি : তৃণমূল পর্যায় থেকে বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। গ্রামীণ জনগণকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক হলো প্রথম সেবা কেন্দ্র। বর্তমানে ১৩ হাজার ৭৭৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন করে রোগী সেবা গ্রহণ করে থাকেন, যার ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু।
সারাদেশে প্রায় চার হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসবসেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক ঝুঁকি হ্রাসে বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী, ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির পাইলট প্রকল্প চলমান রয়েছে।
চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকায়ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিকায়নের লক্ষ্যে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ ও সান্ধ্যকালীন স্বাস্থ্যসেবা ভবন নির্মাণ করা হবে।
আগামী ২০১৯ ও ২০২০ অর্থবছরে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশ্বমানের বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিট ও সাধারণ রোগীদের সেবার পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে অতিথি ভবন নির্মাণ ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা হবে।
এছাড়া এ খাতে আইন প্রণয়নের কাজ বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী বছরগুলোতে সরকারি মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা আইন এবং বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল শিক্ষা বোর্ড আইন প্রণয়নের উদ্যোগ চলমান রয়েছে।
অটিস্টিক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা : অটিস্টিক অর্থাৎ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নাগরিককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের চিকিৎসাসহ অন্যান্য সামাজিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। তারা যে সকল কর্ম সম্পাদনে পারদর্শী ও সক্ষম, সে কাজে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মক্ষম করে গড়ে তোলা হবে।
মাতৃ মৃত্যুহার কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন হাজার মিডওয়াইফ পদ সৃজন করা হয়েছে। ২০১৮ সালে পাঁচ হাজার ১০০ সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নার্সিং শিক্ষা সম্প্রসারণে আগামী অর্থবছরে তিনটি নার্সিং কলেজ ও পাঁচটি নার্সিং বয়েজ হোস্টেল স্থাপন করা হবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস